প্রবাস আয় পাঠানোয় শীর্ষে যুক্তরাষ্ট্র


ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশিরা সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স (প্রবাস আয়) পাঠিয়েছেন বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে উঠে এসেছে। দেশটি থেকে বাংলাদেশে ফেব্রুয়ারিতে রেমিট্যান্স এসেছে ৪৯১.২৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

গত আগস্ট মাসে রাজনৈতিক পট-পরিবর্তনের পর যুক্তরাষ্ট্র থেকে রেমিট্যান্স প্রবাহ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘকাল ধরে প্রবাসী আয়ের শীর্ষ উৎস সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ছাড়িয়ে গেছে।

আগের মাসে বাংলাদেশে মোট ৩৩৪.৯৪ মিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাত দ্বিতীয় স্থানে ছিল।

সৌদি আরবে সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি অভিবাসী কর্মী বাস করছেন। সেখানকার প্রবাসীরা প্রায় ৩২৮.৮৪ মিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন, যা দেশটিকে তৃতীয় স্থানে রেখেছে।

যুক্তরাজ্যের প্রবাসীদের কাছ থেকে বাংলাদেশ ৩০৫.৫২ মিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পেয়েছে, যা এই মাসে চতুর্থ সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স প্রেরক দেশ।

অন্যদিকে, মালয়েশিয়া পঞ্চম স্থানে রয়েছে। মালয়েশিয়া থেকে প্রবাসীরা ফেব্রুয়ারিতে ১৮৩.৮৭ মিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন।

বাংলাদেশে রেমিট্যান্স পাঠানোর ক্ষেত্রে শীর্ষ ১০টি দেশের মধ্যে রয়েছে কুয়েত, ওমান, ইতালি, কাতার ও সিঙ্গাপুর।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, প্রবাসী বাংলাদেশিরা ফেব্রুয়ারিতে ২,৫২৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন, যা আগের বছরের একই মাসের তুলনায় প্রায় ২৫ শতাংশ বেশি।

২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রবাসীরা ২,০২২ মিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন।

চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে, জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রেমিট্যান্স প্রাপ্তির হার বছরে ২৩.৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সময়কালে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ১৮,৪৯০ মিলিয়ন ডলার। গত বছর এই পরিমাণ ছিল ১৪,৯৩৫ মিলিয়ন ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংক রেমিট্যান্স প্রবাহ সম্পর্কিত মাসিক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, মূল্যস্ফীতির চাপ, বিনিময় হারের ওঠানামা ও ক্রমবর্ধমান আমদানি ব্যয়ের কারণে বর্তমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে রেমিট্যান্স অনেক স্বস্তি দিয়েছে।
 
রেমিট্যান্স প্রবাহ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ শক্তিশালী করেছে এবং দেশজুড়ে লক্ষ লক্ষ পরিবারকে সহায়তা করেছে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘রেমিট্যান্সের নিরবচ্ছিন্ন প্রবাহ স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে এনেছে যা দারিদ্র্য হ্রাস, জীবনযাত্রার মান উন্নত ও আঞ্চলিক উন্নয়নে অবদান রেখেছে।’
 
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে,‘মহামারী-পরবর্তী চলমান অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রয়াসের পাশাপাশি রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি টিকিয়ে রাখতে, ব্যাংকিং খাতে তারল্য নিশ্চিত করতে এবং বৈদেশিক ঋণের ওপর নির্ভরতা হ্রাস করতে রেমিট্যান্স আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’ 

এই সময়ে সংযুক্ত আরব আমিরাত ছিল রেমিট্যান্সের বৃহত্তম উৎস এবং তারপরেই যুক্তরাষ্ট্র।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশি প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স বৈদেশিক মুদ্রার অন্যতম বৃহত্তম উৎস।

বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়ে অভিবাসী কর্মীদের সহায়তা প্রদান, রেমিট্যান্সের অর্থনৈতিক সুবিধা বৃদ্ধি করা, গ্রহীতাদের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি উন্নত করা এবং বিদেশে অভিবাসী কর্মীদের চাহিদা পূরণের জন্য লক্ষ্যমাত্রাভিত্তিক কৌশল গ্রহণের জন্য পরামর্শ দিয়েছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ