যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকেই অভিবাসন ইস্যুতে কঠোর নীতিমালা প্রণয়ন করছেন। শপথ নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তিনি একাধিক নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিল এবং সীমান্তে জরুরি অবস্থা ঘোষণা। এসব পদক্ষেপের প্রভাব ইতিমধ্যে দেখা যেতে শুরু করেছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর অভিবাসন নীতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে ভারত সরকারও তাদের অবৈধ অভিবাসীদের ফিরিয়ে নিতে সম্মত হয়েছে। নিউইয়র্ক ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাসরত ভারতীয় নাগরিকদের শনাক্ত ও ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য কাজ করতে প্রস্তুত নয়াদিল্লি।
যুক্তরাষ্ট্র প্রায় ১৮ হাজার ভারতীয় অবৈধ অভিবাসীকে চিহ্নিত করেছে, যাদেরকে ভারতে ফেরত পাঠানো হবে। ভারত সরকার এই বিষয়ে যাচাই-বাছাই করে প্রক্রিয়া শুরু করবে। যদিও প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীদের মধ্যে পাঞ্জাব ও গুজরাটের তরুণদের সংখ্যা বেশি। তবে কোন রাজ্যের কতজন এই তালিকায় রয়েছেন, তা এখনও নির্দিষ্ট করে জানা যায়নি।
অবৈধ অভিবাসন প্রতিরোধ করা ট্রাম্পের অন্যতম নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল। ক্ষমতা গ্রহণের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তিনি সীমান্তে সেনা মোতায়েন এবং জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিলের উদ্যোগ নেন। তার এসব পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে ট্রাম্প প্রশাসন কঠোর অবস্থান স্পষ্ট করেছে।
ভারত সরকার ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে এই সহযোগিতা করে তাদের বাণিজ্যিক সম্পর্ক মজবুত রাখতে এবং ভিসা সংক্রান্ত সুবিধা সুরক্ষিত করতে চায়। বিশেষ করে, এইচ-১বি ভিসা এবং শিক্ষার্থীদের জন্য ভিসার বিষয়গুলো নিয়ে ভারতের প্রত্যাশা রয়েছে।
২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে অনুমোদিত ৩ লাখ ৮৬ হাজার এইচ-১বি ভিসার মধ্যে তিন-চতুর্থাংশই ভারতীয়দের জন্য বরাদ্দ ছিল। ভারত সরকারের আশা, অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর মাধ্যমে বৈধ অভিবাসন প্রক্রিয়া আরও মসৃণ হবে এবং দক্ষ কর্মী ও শিক্ষার্থীদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের সুযোগ বৃদ্ধি পাবে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানিয়েছেন, অবৈধ অভিবাসন প্রতিরোধে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র একসঙ্গে কাজ করছে। এর মাধ্যমে বৈধ অভিবাসনের সুযোগ বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
0 মন্তব্যসমূহ