নীতা আম্বানি এবং মুকেশ আম্বানির প্রেম এবং বিয়ের গল্পটি একটি আকর্ষণীয় এবং রোমান্টিক কাহিনি হিসেবে পরিচিত। তাদের পরিচয় এবং বিবাহ সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিচে উল্লেখ করা হলো।
প্রথম পরিচয় এবং প্রেমের শুরু
নীতা আম্বানি, যিনি তখনও নীতা দালাল নামে পরিচিত ছিলেন, একজন দক্ষ ভরতনাট্যম নৃত্যশিল্পী ছিলেন। মুকেশ আম্বানির মা কোকিলাবেন আম্বানি এক অনুষ্ঠানে তার নৃত্য দেখে মুগ্ধ হন এবং তখনই তার মনে হয় যে নীতা তার বড় ছেলের জন্য একজন আদর্শ জীবনসঙ্গী হতে পারেন। এরপর কোকিলাবেন নিজেই নীতার সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং তার পরিচয় করিয়ে দেন মুকেশের সঙ্গে।
মুকেশ ও নীতার প্রথম দেখা হওয়ার পর থেকেই তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে এবং পরে তা গভীর ভালোবাসায় রূপ নেয়। তাদের সম্পর্ক ছিল সহজ এবং স্বতঃস্ফূর্ত, যা খুব দ্রুতই একে অপরের প্রতি দায়বদ্ধতায় রূপান্তরিত হয়। মুকেশের সহানুভূতি এবং সাধারণ জীবনযাপনের প্রতি ভালোবাসা নীতাকে গভীরভাবে আকর্ষণ করেছিল। অন্যদিকে, নীতার সরলতা এবং জীবনের প্রতি তার দায়িত্ববোধ মুকেশকে প্রভাবিত করেছিল।
বিয়ের প্রস্তাব এবং ঐতিহাসিক ঘটনা
একটি মজার ঘটনা হলো, মুকেশ আম্বানি নিজেই তার বিয়ের প্রস্তাব দেন খুবই সাধারণ এক উপায়ে। মুম্বাইয়ের একটি ট্রাফিক সিগন্যালে অপেক্ষারত অবস্থায়, মুকেশ হঠাৎ করেই নীতাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন এবং তাকে বলেন যে, তিনি এই ট্রাফিক সিগনাল পার হওয়ার আগে "হ্যাঁ" বললে তার ভালো লাগবে। অবাক হলেও, নীতা সেই মুহূর্তে প্রস্তাবে সম্মতি দেন, এবং এরপরই তাদের বিয়ের প্রস্তুতি শুরু হয়।
বিয়ে এবং বিবাহিত জীবন
নীতা এবং মুকেশ ১৯৮৫ সালে বিয়ে করেন। তাদের বিবাহ অনুষ্ঠানটি ছিল সাধারণ, কিন্তু আম্বানি পরিবারের ঐতিহ্যের সঙ্গে সম্পন্ন করা হয়েছিল। মুকেশ এবং নীতা সবসময়ই একটি সাধারণ জীবনযাপন এবং পারিবারিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী, যা তাদের বিবাহিত জীবনেও প্রতিফলিত হয়।
বিয়ের পরও নীতা নিজেকে শুধুমাত্র একজন বাড়ির গৃহিণী হিসেবে সীমাবদ্ধ না রেখে সামাজিক কাজে নিজেকে নিয়োজিত করেন এবং রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে সমাজসেবামূলক কাজ শুরু করেন। তাদের বিবাহিত জীবনে তিন সন্তান—আকাশ, ঈশা, এবং অনন্ত—তাদের পারিবারিক বন্ধনকে আরও শক্তিশালী করেছে।
মুকেশ ও নীতার সম্পর্কের সাফল্যের রহস্য
মুকেশ ও নীতার সম্পর্কের মূল ভিত্তি হল পারস্পরিক সম্মান এবং সমঝোতা। নীতা সবসময় মুকেশের ব্যস্ত জীবন এবং দায়িত্ব বুঝে তাকে সমর্থন করে আসছেন, আবার মুকেশও সবসময় নীতাকে তার স্বপ্ন এবং কাজের প্রতি উৎসাহিত করেছেন। তাদের বন্ধন, ভালোবাসা এবং দায়িত্ববোধই তাদের সম্পর্কের সাফল্যের মূল চাবিকাঠি হিসেবে দেখা হয়।
উপসংহার
নীতা এবং মুকেশের প্রেম ও বিবাহের কাহিনি শুধুমাত্র একটি দাম্পত্য সম্পর্কের গল্প নয়, বরং এটি বিশ্বাস, দায়িত্ববোধ এবং পারস্পরিক সমর্থনের এক অনন্য উদাহরণ। তাদের ভালোবাসা ও সাফল্য শুধু ভারত নয়, পুরো বিশ্বের মানুষের জন্যই এক অনুপ্রেরণা।
0 মন্তব্যসমূহ