আমন ধান কাটা ও মাড়াইয়ে ব্যস্ত কৃষক


নড়াইলের লোহাগড়ায় রোপা আমন ধান কাটা-মাড়াইয়ের ধুম পড়েছে। এ মৌসুমে রোপা আমন ধানের ফলনও ভালো হয়েছে। ফলে উৎসব মুখর পরিবেশে আমন ধান কাটা-মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। এছাড়া গরুর খাদ্য হিসেবে খড়ের চাহিদা বৃদ্ধি ও ধানের দাম ভালো থাকায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও একটি পৌর সভায় ১১ হাজার ২৩০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান চাষ হয়েছে। গত বছর ১১ হাজার ২০৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান চাষ করা হয়েছিল। যা গত বছরের তুলনায় এ বছর ২৫ হেক্টর জমিতে বেশি চাষ হয়েছে।


শনিবার উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, মরিচ পাশা, চাচই, মল্লিকপুর, ধানাইড়, আমডাঙ্গা, কামঠানা, কালনা, গন্ডব, দিঘলিয়া, লাহুড়িয়া, দেবী, নলদী, আড়পাড়া, মাকড়াইল, ইতনা, সরুশুনা, এড়েন্দা, শিয়রবর, আড়িয়ারা, এলাকায় কৃষকেরা ধান কাটা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। সেইসঙ্গে কৃষাণীরাও মনের আনন্দে ধান শুকিয়ে গোলায় তোলার কাজে সাহায্য করছেন।


এ মৌসুমে উপজেলায় ব্রি ধান-১০৩, বি-আর ২৮, বি-আর ২৯সহ বিভিন্ন প্রজাতির ধান চাষ করে কৃষকরা। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় রোপা আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে। ফসলের দাম ভালো থাকায় এই বছর ধান কাটা শ্রমিকের সংকট লক্ষ্য করা যায়নি।


মরিচ পাশা গ্রামের কৃষক মোশারফ বলেন, আমি স্বর্না ধান, বিআর- ৩৯ ধান রোপণ করেছিলাম দুই একর জমিতে। ফলন ভালো হয়েছে। তবে পানির কারণে ধানের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। 


কৃষক লিন্টু ঠাকুর, আজিবর ও গোলজার মৃধা জানান, এ বছর সরিষা, মুশুরী, কলাই, ও গমের দাম থাকায় অনেক কৃষক আগাম রোপা আমন ধান কাটা শুরু করেছেন। ধান বাড়িতে আসায় কৃষি নির্ভর পরিবার বাড়ির আঙিনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ শুরু করেছেন। তাদের মাঝে অনেক উৎসাহ উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে।

কৃষক আজাদ মোল্যা বলেন, আমি দেড় একর জমিতে রোপা আমন ধান চাষ করেছি। রোপা আমন ধান কাটা শুরু করেছি। এসব জমির ধান কয়েক দিনের মধ্যে ঘরে তুলতে পারব। তবে জমির ধান কেটে আবার বোরো ধান রোপণ করব।

তিনি আরো জানান, বর্তমানে প্রতি মণ ধানের দাম ১ হাজার ৩০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে ধানের থেকে গো-খাদ্য খড়ের চাহিদা ও মূল্য বেশি থাকায় কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। এ ধান বিক্রি করে চাষিরা পরবর্তী কৃষিপণ্য সরিষা, মুশুরী, কলাই ও গম চাষের অর্থ জোগান দিচ্ছেন।

লোহাগড়া উপজেলা সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা নিবিড় কুমার সাহা জানান, চলতি মৌসুমে উপজেলায় রোপা আমন ধানের ফলন ভালো হয়েছে। তবে পানি আসায় ধানের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। এ বছর রোপা আমন ধানের ক্ষেতে তেমন রোগবালাই দেখা যায়নি। 

তিনি আরো বলেন, ব্রি ধান-১০৩ এই ধানের ফলন খুব ভালো হয়েছে। ভালো ফলন পেতে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের নানা ভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে উচ্চফলনশীল জাতের ধান চাষে লাভবান হওয়ায় কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ