আপনার পকেট ও ব্যাংক ব্যালেন্স মিলিয়ে কত টাকা রয়েছে? হাজার, লাখ কিংবা কয়েক কোটি! কিন্তু একটি বিড়াল আপনার চেয়েও বড় ধনী। তার রয়েছে শত শত কোটি টাকা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এই বিড়াল বেশ পরিচিত। সম্প্রতি বিশ্বের সবচেয়ে ধনী বিড়াল হিসেবেও নজির গড়েছে, নাম উঠেছে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস বুকেও।
আলোচিত এই বিড়ালের নাম ‘নালা’। লস অ্যাঞ্জেলসের একটি উদ্ধারকারী সংস্থা থেকে নালাকে উদ্ধার করে নিয়ে গিয়েছিলেন ভারিসিরি ম্যাথাচিটিফান ওরফে পুকি নামে এক তরুণী। তখন নালার বয়স ছিল মাত্র চার মাস। তারপর থেকে পুকির কাছেই রয়েছে নালা।
২০১২ সালে নালার নামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি অ্যাকাউন্ট খোলেন পুকি। নালার দৈনন্দিন জীবনের যাবতীয় খুঁটিনাটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা হতো। নালার সেসব ছবি এবং ভিডিও ধীরে ধীরে নেটিজেনদের নজর কাড়তে থাকে। খুব কম সময়ের মধ্যেই নালার জনপ্রিয়তা হয়ে ওঠে আকাশচুম্বী।
স্থানীয় এক টিভি চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় পুকি বলেন, ‘আমি কখনো ভাবতেও পারিনি যে নালার অ্যাকাউন্ট এতটা জনপ্রিয় হয়ে উঠবে। এখন আমি আর চাকরিবাকরি করি না। নালার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অ্যাকাউন্টগুলো সামলাতে হয় আমাকে। তাতেই দিন কেটে যায়।’
পুকি জানান, নালার কারণেই ভালোবাসার মানুষের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছে তার। শ্যানন নামে এক তরুণের সঙ্গে সম্পর্কে রয়েছেন পুকি। নালার জন্যই তাদের দুজনের আলাপ হয়। সাক্ষাৎকারে পুকি বলেন, ‘নালার জন্য ৫০টি বো টাই অনলাইনে অর্ডার করতে চেয়েছিলাম আমি। অনলাইনে বিড়ালের জন্য বো টাই বিক্রি করতেন শ্যানন। সেই সূত্রেই শ্যাননের সঙ্গে আলাপ।’
ক্রেতা-বিক্রেতার সম্পর্ক থেকে শুরু হলেও পুকি এবং শ্যাননের বন্ধুত্ব গাঢ় করতে সাহায্য করে নালা। বিড়ালের প্রতি ভালোবাসাই পুকি এবং শ্যাননকে আরো কাছাকাছি নিয়ে আসে। দীর্ঘ দিন ধরে সম্পর্কে রয়েছেন তারা।
এরই মধ্যে ইনস্টাগ্রামের পাতায় নালার অনুগামীর সংখ্যা ৪৫ লাখের গণ্ডি পার করে ফেলেছে। নালার প্রতিটি ছবি এবং ভিডিও দেখার জন্য অপেক্ষায় থাকেন তার ফরোয়ার্সরা। জানলে হয়তো অবাক হবেন, ইনস্টাগ্রামের একেকটি পোস্ট করে বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৬ লাখ টাকা পর্যন্ত উপার্জন করে নালা।
গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড সূত্রে জানা যায়, নালার মোট সম্পত্তির পরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় ৯৮০ কোটি টাকা। নালা এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে যে তার নামে ‘ক্যাটফুড’ তৈরির একটি সংস্থাও গড়ে ওঠে। জানা গেছে, বিড়ালদের উদ্ধার করতে আর্থিক সাহায্যও করেন পুকি।
নালার নামে ‘ক্যাটফুড’ তৈরির সংস্থার পক্ষ থেকে বিনামূল্যে প্রায় দেড় লাখ বিড়ালকে এখনও পর্যন্ত খাওয়ানো হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বহু পোষ্যের অ্যাকাউন্ট রয়েছে। কিন্তু সবার চেয়ে ফলোয়ার্সের সংখ্যার দিক থেকে এগিয়ে রয়েছে নালা। সম্পত্তির দিক থেকেও বিশ্বের সবচেয়ে ধনী বিড়াল নালা। সেই কারণে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম লিখিয়ে নজির গড়েছে সে।
টিকটকে ভিডিও তৈরি করে বহু প্রভাবী খ্যাতনামী হয়েছেন। তবে চলতি বছরে ‘টিকটকার’ হিসাবে সকলকে পার করে বর্ষসেরা প্রভাবী হয়েছে নালা।
0 মন্তব্যসমূহ