নারায়ণগঞ্জের কিছু অজানা তথ্য


আমরা নারায়ণগঞ্জ জেলার বাসিন্দা হলেও অনেকে নারায়ণগঞ্জ জেলা সম্পর্কে অনেক কিছুই জানিনা। ভাষা আন্দোলন,মুক্তিযুদ্ধ সহ প্রতিটি ক্ষেত্রে নারায়ণগঞ্জ জেলার মানুষের অনেক অবদান আছে। এছাড়াও নারায়নগঞ্জে আছে ঐতিহাসিক স্থান,বিখ্যাত ব্যক্তিত্বসহ আরোও অনেক কিছু।

আজকের এই ভিডিওতে আমরা নারায়ণগঞ্জের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস তুলে ধরার চেষচ্টা করেছি, আশা করছি সম্পূর্ন্য ভিডিও টি দেখবেন 😊

১৭৬৬ সালে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতা বিকন লাল পান্ডে (বেণুর ঠাকুর বা লক্ষীনারায়ণ ঠাকুর নামে ও পরিচিত)ইস্টইন্ডিয়া কোম্পানির নিকট থেকে এ অঞ্চলের(নারায়ণগঞ্জ) মালিকানা গ্রহণ করেন। তিনি প্রভু নারায়ণের সেবার ব্যয়ভার বহনের জন্য একটি দলিলের মাধ্যমে শীতলক্ষা নদীর তীরে অবস্থিত মার্কেটকে দেবোত্তর সম্পত্তি হিসেবে ঘোষণা করেন। তাই পরবর্তীকালে এ স্থানের নাম হয় নারায়ণগঞ্জ। তবে সপ্তদশ ও অষ্টাদশ শতাব্দীর মধ্যভাগ পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ নামের কোনো নগরীর অস্তিত্ব প্রাচীন বাংলার মানচিত্রে পাওয়া যায় না।😊

নারায়ণগঞ্জ জেলার অভ্যন্তরীণ মানচিত্র

২৯২ বর্গমাইল এলাকা নিয়ে ১৯৮৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জকে জেলা হিসেবে ঘোষনা করা হয় যা ৫টি উপজেলা নিয়ে গঠিত । ১৮৮২ সালে নারায়ণগঞ্জকে মহকুমা ঘোষিত হয়,যা ১৯৮৪ সালে জেলায় উন্নীত হয়।

★২০১১ সালের ৫ই মে নারায়ণগঞ্জ সদরকে সিটি কর্পোরেশন করা হয়। 
★নারায়নগঞ্জ জেলা ৭টি থানায় বিভক্ত। সেগুলো হল -১.নারায়ণগঞ্জ সদর থানা
২.ফতুল্লা থানা
৩.সিদ্ধিরগঞ্জ থানা
৪.বন্দর থানা
৫.আড়াইহাজার থানা
৬.রূপগঞ্জ থানা ও
৭.সোনারগাঁও থানা।

★এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জ জেলায় উপজেলা ৫টি। সেগুলো হল -.
১.নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা
২.বন্দর উপজেলা
৩.আড়াইহাজার উপজেলা
৪.রূপগঞ্জ উপজেলা ও
৫.সোনারগাঁও উপজেলা।

★মোট ওয়ার্ড সংখ্যা ৬৩টি,
★গ্রাম- ১৩৩টি, 
★মহল্লা ৭৪টি।
★পৌরসভা - ০১টি- সিদ্ধিরগঞ্জ পৌরসভা।
★৫টি ইউ,পি নিয়ে ডি.এন.ডি এলাকা গঠিত। এর আয়তন ৮,৫৪০ একর।
★সিটি কর্পোরেশন - ০১টি।

♦ নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন(নারায়ণগঞ্জ পৌরসভা, বন্দর থানার কদমরসুল ও সিদ্ধিরগঞ্জ পৌরসভা নিয়ে এ কর্পোরেশন গঠিত হয়েছে)

নারায়ণগঞ্জ_এর_নদ_নদী

নারায়ণগঞ্জ জেলা ছয় (০৬) টি নদ-নদী দ্বারা বেষ্টিত।

নারায়ণগঞ্জের মধ্য দিয়ে শীতলক্ষ্যা নদী প্রবাহিত। পূর্ব সীমানা দিয়ে মেঘনা নদী, পশ্চিম সীমানার কিছু অঞ্চল দিয়ে বুড়িগঙ্গা এবং দক্ষিণ/পশ্চিম সীমানায় ধলেশ্বরী নদী প্রবাহিত।
ঢাকা থেকে প্রায় ২০ কিমি দক্ষিণ-পূর্বে লাঙ্গলবন্দের মধ্য দিয়ে ব্রহ্মপুত্রের প্রবাহীত হয়েছে। প্রতিবছর চৈত্র মাসের অষ্টমী তিথিতে এই স্থানে ব্রহ্মপুত্র নদে পুণ্যস্নানার্থে দেশ-বিদেশের হাজার হাজার হিন্দু ধর্মাবলম্বী ভক্তপ্রাণের আগমন ঘটে। ভক্তগণের বিশ্বাস এ সময় ব্রহ্মপুত্র নদে স্নান খুবই পুণ্যের, এ স্নানে ব্রহ্মারসন্তুষ্টি লাভ করে পাপমোচন হয়। এই স্নানই অষ্টমী স্নাননামে অভিহিত। অধিকাংশ স্থানীয় লোকজনের বিশ্বাস, চৈত্রের শুক্লাষ্টমীতে জগতের সকল পবিত্র স্থানের পুণ্যব্রহ্মপুত্রে মিলিত হয়। নদীর জল স্পর্শমাত্রই সকলের পাপ মোচন হয়। যে এই পবিত্র জলে স্নান করে সে চিরমোক্ষ লাভ করে।

এছাড়া,নরসিংদীর টোকবর্গী থেকে মুন্সীগঞ্জের মোহনা পর্যন্ত দীর্ঘ ৬৫ মাইল শীতলক্ষ্যা নদী নারায়ণগঞ্জের ওপর দিয়ে প্রবাহিত। ইংল্যান্ডের টেমস নদীর পর পৃথিবীর দ্বিতীয় ‘হারবার’ বেষ্টিত শান্ত নদী শীতলক্ষ্যা।

#ভাষা_আন্দোলনে_নারায়ণগঞ্জ 

৫২ এর ভাষা আন্দোলন নারায়ণগঞ্জবাসীর কাছে স্বরণীয় ও বরণীয় এক অধ্যায়। 
যেহেতু নারায়ণগঞ্জ থেকে ২০ কিঃমিঃ অদুরেই অবস্থিত ঢাকা জেলা, তাই পার্শ্ববর্তী জেলা হিসেবে পাকিস্তানি স্বৈরশাসককে উৎখাত করার জন্যই এ এলাকার জনগন ছিল প্রতিবাদমুখর।
তৎকালীন ছাত্রনেতা শামসুজ্জোহা,বজলুর রহমান, বদরুজ্জামান, মফিজ উদ্দিন, হাবিব রশিদ, সুলতান মাহমুদ মলি­ক, কাজী মজিবুর , শেখ মিজান ও এনায়েত নগরের শামসুল হক প্রমুখের নেতৃত্বে ভাষা আন্দোলনে স্বক্রীয় ভূমিকা নিতে সক্ষম হন। এখনও এ অঞ্চলের প্রতিটি মানুষ ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসকে অন্তরে ধারন করে প্রতিবৎসর ২১শে ফেব্রুয়ারি  প্রভাতফেরীতে অংশগ্রহন করেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ